বুধবার, ৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তালায় জলাবদ্ধতার কারণে ইরি বোরো চাষের অনিশ্চয়তা, কৃষকের মাথায় হাত

নিউজ ডেস্ক।।
জানুয়ারি ৭, ২০২৫ ৪:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাতক্ষীরার তালায় জাতপুর, আলাদীপুর ও পাঁচরোখী বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে শত শত বিঘা জমিতে ইরি বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে ক্ষুদ্র, মাঝারী ও মধ্যবিত্ত কৃষক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, তালা উপজেলার জাতপুর, আলাদীপুর, পাঁচরোখী ও ডুমুরিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর বিল স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তালার কপোতাক্ষ নদ ও ডুমুরিয়া উপজেলার ভদ্রা নদীর সাথে এসকল বিলের সংযোগ খাল দীর্ঘদিন খনন না হওয়ার কারণে এ জলাবন্ধতার মূল কারণ। এছাড়াও এলাকার জমির মালিক ও গ্রামবাসি খালগুলো অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টির ফলে বিলের জমা পানি আর নদীতে পড়তে পারছে না। যার কারণে এলাকার ক্ষদ্র কৃষক থেকে শুরু করে এই বিলের জমির মালিকগণের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। এই বিলের ফসলের উপর নির্ভর করে চলে এঅঞ্চলের মানুষের সংসার। যদি ইরি বোরো চাষ না করতে পারে তাহলে সারা বছর তাদের অভাব অনাটনের মধ্যে দিন কাটাতে হবে। এছাড়া পাঁচরোখী গ্রামের বাদশা আলী সরকারী কালভার্টের মুখ বেঁধে দেয়ার কারণে এসকল বিলের পানি নামার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এলাকার আলাদীপুর গ্রামের কৃষক মোসলেম উদ্দীন মোড়ল বলেন, এই বিলে আমার প্রায় ১০ বিঘা জমি আছে। এই বিলে যে ধান হয় সেই ধানে আমার সারা বছরের খাবার হয়ে যায়। এবার যদি ধান চাষ করতে না পারি তাহলে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়ে যাবে। যদি পানি সরানোর ব্যবস্থা করা না যায় তাহলে এসকল বিলের প্রায় ১ হাজার বিঘা জমিতে ধান চাষ হবে না।
জাতপুর গ্রামের হোসেন আলী খাঁ বলেন, এই বিলে আমার প্রায় ২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। আমার ৫ জন মানুষের সংসার। এই বিলে ধান চাষ করে সারা বছরের খাবার যোগাড় করি। ছোট একটি মুদির দোকান আছে তা থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে ঔষধ পত্র সহ বাজার করি। এবার এই জমিতে ধান চাষ করতে না পারলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। পাঁচরোখী গ্রামের জাতপুর শুকদেবপুর রাস্তার সরকারী কালভার্টের মুখ বাদশা আলী বেঁধে দেয়ার কারনে এই বিলের পানি মোটেই নামছে না।
পাঁচরোখী গ্রামের বাবলু শেখ বলেন, এ বিলে আমার দেড় বিঘা জমি আছে। এই জমিতে যে ধান হয় সেই ধানে আমার সংসার চলে। এবার যদি ধান চাষ করতে না পারি তাহলে সংসার কি ভাবে চলবে তা বুঝতে পারছিনে। উপজেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে এই বিলের পানি সরানোর ব্যবস্থা করে আমাদের ধান চাষের সুযোগ করে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বিল জলাবদ্ধ। এখন ধান রোপনের মৌসুম। যে যে ভাবে পারছে নিজে বাঁচার জন্য বেঁধে নিচ্ছে। তবে পানি সরানোর ব্যবস্থা করা না গেলে এসকল বিলে এবার ধান চাষ সম্ভব হবে না।
উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, এবছর তালা উপজেলায় ১৯ হাজার ১ শত ৫৫ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে ১ শত ৭৫ হেক্টর জমি আবাদ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে জলাবদ্ধতা নিরষনের জন্য সেচ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এটা ফলপ্রসু হলে হয়ত আরও ১ শত ২০ হেক্টর জমি আবাদ করা সম্ভব হবে।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ রাসেল বলেন, এলাকায় ধান চাষ সহজতর করতে পানি সরানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে ডুমুরিয়া উপজেলার চুকগনর ও নরনিয়া অঞ্চল দিয়ে পানি না নামার কারণে এই এলাকা স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
##

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।