পাইকগাছার কপিলমুনিতে রিয়াদ হোসেন পৃথিবী (১৬) নামে এক কিশোরকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করেছে স্থানীয় কেথিত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। পৃথিবী তালা উপজেলার বারুইহাটির কামরুল সরদারের ছেলে। স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার শিকার কিশোরকে উদ্ধার করে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সর্বশেষ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, রিয়াদ হোসেন পৃথিবী মামার বাড়িতে বেড়াতে এসে অদূরে উপজেলার কপিলমুনির কাশিমনগর কাবুলিয়াঘাট এলাকায় বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যায়। এসময় সেখানে উপস্থিত স্থানীয় কথিত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে তাদের হামলার শিকার হয়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গ্যাংয়ের সদস্যদের সাথে ইতোপূর্বে তালাসহ একাধিক স্থানে পরষ্পর মারামারির ঘটনা ঘটে। তবে বসাবসির মাধ্যমে এসব ঘটনার সমাধান হয়। সর্বশেষ ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর পৃথিবীকে তাদের এলাকায় পেয়ে তারা তার উপর সংঘবদ্ধ এ হামলা চালায়।
চিকিৎসাধীন পৃথিবী জানায়, তহিদ নামে এক কিশোরের নের্তৃত্বে ১২/১৪ জন হাতে লোহার রড দিয়ে তার উপর হামলে পড়ে বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্নক আহত করে। এসময় তার আত্নচিৎকারে আশ-পাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সবুজ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এবং এ সংক্রান্তে স্থানীয়ভাবে বিস্তারিত তথ্য-উপাথ্য সংগ্রহ করেছেন। ঘটনায় ঠিক কারা জড়িত রয়েছে এবং কি কারণে তার উপর হামলা হয়েছে তা জানার চেষ্টা করছেন বলে দাবি করেনে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে স্থানীয় বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় ১৫/২০ জনের একটি গ্রুপ কাশিমনগর বটতলা সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু করে তালতলা গেট ভায়া শিশুতলা নামক স্থানে নিয়মিত আড্ডা বসায়। এসময় তারা বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে জড়ায়।
সূত্র দাবি করছে, গত পতিত সরকারের সময়ে তারা নিজেদের ছাত্রলীগ আবার কখনো ভাই লীগ, মামা লীগের নামে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে নানা অপকর্মে জড়ায়। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তাদের অনেকে মামা লীগের অনুসারী হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের উপর হামলায় জড়ায়। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় এদের একজন নাজমুল সরদার সরাসরি আসামীও হয়। তবে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বর্তমানে তারা সংঘবদ্ধভাবে চলাফেরা করায় পুলিশ তাকে আটক করতে পারছিলনা। যদিও শেষে নাজমুল আটক হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে নাজমুল আটক হলেও তার অনুসারী কথিত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা শিশুতলা, কাবুলিয়াঘাট, তালতলা ও বটতলা সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত নির্বিঘ্নে চলাচল করছে।
স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা এ প্রতিবেদককে জানান, স্থানীয় পুলিশের নির্লিপ্ততায় মূলত এরা বেপরোয়া থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তারা এব্যাপারে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।