সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন সামাজিক বনাঞ্চল থেকে প্রায় দুই হাজার বাউলা গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বনপ্রহরী ইউনুস আলী সরদারের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলছেন, এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এ ঘটনা শুধু বনাঞ্চলকে হুমকির মুখে ফেলে না, বরং স্থানীয় পরিবেশ ও জনজীবনের উপরও গভীর প্রভাব ফেলে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে বন বিভাগ কপোতাক্ষ নদীর বাঁধ এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১০ হাজার চারা রোপণ করেছিল। এ গাছগুলোর পরিচর্যার জন্য গঠন করা হয়েছিল সামাজিক বনায়ন কমিটি। কিন্তু সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতের সুযোগ নিয়ে বনপ্রহরী ও স্থানীয় কমিটির নেতৃত্বে এই গাছগুলো কেটে ফেলার অভিযোগ এলাকার মানুষকে স্তম্ভিত করেছে।
এলাকাবাসী জানান, গত এক মাস ধরে প্রতিদিন ১০-১২ জন শ্রমিক দিয়ে বহিরাগতভাবে গাছ কাটা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৬০-৮০ মণ জ্বালানি কাঠ, ৩০০-৪২০টি গুঁড়ি এবং বিপুল পরিমাণ ডালপালা সংগ্রহ করে বড় ট্রলারযোগে পাইকগাছা ও আশপাশের এলাকায় পাচার করা হয়েছে। এটি শুধু বনাঞ্চলের ভৌগোলিক ভারসাম্য নষ্ট করছে না, স্থানীয় জীববৈচিত্র্যকেও বিপন্ন করছে।
চরগ্রামের বাসিন্দা আনিছ ফকির বলেন, “শত শত গাছ কেটে নেওয়া হলেও এর কোনো সঠিক হিসাব নেই। বনাঞ্চলকে ইচ্ছেমতো উজাড় করা হচ্ছে, অথচ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।” রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, সামাজিক বনাঞ্চলকে ঢালাওভাবে উজাড় করা হচ্ছে, অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চুপ রয়েছে।
সম্পাদকীয় ভাবনায় এটি শুধু বন প্রহরীর কুকর্ম নয়, এটি বন বিভাগের সম্পূর্ণ দায়িত্বহীনতার নিদর্শন। বনাঞ্চল ও পরিবেশের রক্ষার জন্য এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হলে, এমন অব্যবস্থাপনা ভবিষ্যতে অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। আমরা দাবি জানাচ্ছি—দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং বনাঞ্চলের পুনঃস্ফূর্তির জন্য সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।