সাতক্ষীরার তালায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বাংলা ও বাঙ্গালীর ঐতিহ্য বাংলা নববর্ষ ও বর্ষবরণ উৎযাপিত হয়েছে। অনুষ্ঠান সূচিতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বাণি প্রদান, প্রভাতী গান, নৃত্য ও বাংলীর ঐতিহ্য পান্তা ইলিশ খাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) এ উপলক্ষে সকাল ৮ টায় তালা সরকারী বিদে পুরাতোন মাঠে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ রাসেল বর্ণাঢ্য র্যালীর উদ্বোধন করেন। তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মাসুদুর রহমান, তালা থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ শাহিনুর রহমান, পাটকেলঘাটা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মইনউদ্দীন এসময় তার সাথে ছিলেন। শোভাযাত্রাটি তালা বিদে হাইস্কুলের মাঠ থেকে শুরু হয়ে তালা বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ঐ মাঠেই শেষ হয়।
তালা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মৃণাল কান্তি রায়, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইদ্রিস আলী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোশারাফ হোসেন, উপজেলা যুব জামায়াতের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান রেন্টু, সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামকাটি ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম ফারুক, জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু, ধানদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, তালা মুক্তিযোদ্ধা কলেজের অধ্যক্ষ ইনামুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মির্জা আতিয়ার রহমান, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স ম ইয়াছিনউল্লাহ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবয়ক রফিকুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ হাফিজুর রহমান, উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ জামালুল বান্না, তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও উপজেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি এম এ হাকিম, সাধারণ সম্পাদক ফারুক জোয়াদ্দার, উপজেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ডেএসডি নেতা মীর জিল্লুর রহমান, তালা বাজার বণিক সমিতির আহবায়ক সরদার নুরুল ইসলাম, হৃদয় সাধু, অমল দত্ত, তালা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম হায়দার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংবাদিক কে এম শাহীনুর রহমান, সেকেন্দর আবু জাফর বাবু সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান গণ শোভা যাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
এসময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী অবিভাবক ব্যানার ফেষ্টুন সহ শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করেন।
তালা উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম বলেন, তালার ইতিহাসে বাংলা নববর্ষের সবচেয়ে বড় শোভাযাত্রা হয়েছে। এর আগে এতবড় শোভাযাত্রা তালার মানুষ দেখেনি। আজকের এই শোভাযাত্রায় ২ সহ¯্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা বলেন, বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খুবই আন্তরিক এবং ক্রিয়েটিভ একজন মানুষ। তালা উপজেলায় যোগদান করেই উপজেলাকে সাজিয়ে গুছিয়ে একটি পরিচ্ছন্ন তালা গড়ার চেষ্টা করেছেন। তার প্রতিটি কাজে আধুনিকতার ছোয়া পাওয়া যায়। আমরা জেনেছি, আজকের প্রোগ্রাম সফল করতে এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে মিটিং ও অংশিজনদের সাথে আলোচনা করে কর্মসূচী সফল করতে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। যার কারণে আজকের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি সফল হয়েছে।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ রাসেল এক বাণীতে বলেন, বাংলা ও বাঙ্গালীর পহেলা বৈশাখ সকল ধর্মের বর্ণের মানুষ একসাথে পালন করতে পারেন। আমাদের এই বর্ষবরণ উৎসব বেশী পুরাতোন নয়। আশির দশকে ঢাকা বিশ^ বিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এর যাত্রা শুরু করে। তবে বাংলা বৈশাখী উৎসব বেশ প্রাচীন। মোগল স¤্রাট আকবরের সময়ে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে ১ বৈশাখে চাষীদের একত্রিত করে খাজনা আদায় করতেন। তখনকার দিনে কাচারী বাড়িতে খাজনা দিতে আসা আগত প্রজাদের মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো। সেই সূত্রধরে ব্যবসায়ী গণ বকেয়া আদায়ের জন্য ১ লা বৈশাখে হালখাতার আয়োজন করে। গতবছরের হতাশা গøানি মুছে ফেলে নতুন বছর পাবার দিন আজ। এটা এখন সার্বজনীন উৎসব।
এখানে সকল ধর্মের মানুষ মিলে মিশে বাস করে। সব শ্রেণী পেশার মানুষ মিলে মিশে যে উৎসব পালন করতে পারে সেটা হলো ১ লা বৈশাখ। শুধু হিন্দু মুসলিম নয় বিভিন্ন পাহাড়ী ও সমতলের মানুষ একাকার হয়ে এই উৎসব পালন করে। ত্রিপুরাদের বৈশবী, চাকমাদের বিষু, মারমা ও রাখাইনদের সাংহাই এক হয়েছে বৈশাখী উৎসবে। বছরের প্রথম দিনে তালাবাসি সহ দেশবাসীর সুন্দর জীবনের প্রত্যাশা করেন তিনি।