সাতক্ষীরার তালা উপজেলার অতিবৃষ্টির কারণে প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে ২০ দিন যাবৎ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। হাজার হাজার হেক্টর ফসলী জমি, মাছের ঘের, কাঁচা-পাঁকা রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত। বসতবাড়ি, দোকানপাট এমনকি হাটবাজারও পানির নীচে। হাজার হাজার পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে গবাদিপশু সহ অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছে। সবচেয়ে বেশী অসুবিধায় পড়েছে দিনমজুর ও ভ্যানচালকরা। রাস্তা ঘাট পানিতে তলিয়ে থাকার কারণে তাদের আয় রোজগার একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে।
রবিবার (২৯ সেপ্টম্বর) সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শিরাশুনি, শুভাষিনী, লাউতাড়া, হাতবাস, মদনপুর, তেরছি, আড়ংপাড়া, ধলবাড়িয়া, শুকদেবপুর সহ অধিকাংশ গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির উঠানে পানি। এসব এলাকার সকল কাঁচাপাকাঁ রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। সেতু বাজার সহ অধিকাংশ বাজারে পানি উঠায় প্রায় অচল হয়ে পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্য। এসব গ্রামের উৎপাদিত পণ্য ৩-৪ কিলোমিটার দূরে এনে বাজারজাত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ অঞ্চলে বেশী অসুবিধার মধ্যে আছে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা। রান্না ঘরে পানি উঠার কারণে অনেক পরিবারে রান্না খাওয়া প্রায় বন্ধের উপক্রম। গ্রামের অধিকাংশ সৌচাগার নিন্মমানের ও পানিতে ডুবে গেছে। যার কারণে মানুষ পড়েছে আরও বিপাকে।
জলাবন্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কারণে এ অঞ্চলে পানিবাহিত রোগের প্রদূর্ভাব বেড়েছে। এলাকা যদি বেশি দিন জলাবদ্ধ থাকে তাহলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে।
এলাকার ঝরণা বেগম, আব্দুল মজিদ, সিরাজুল ইসলাম সহ অনেকই বলেন, আমি সহ এই গ্রামের অনেক মানুষ ভ্যান চালক। রাস্তায় পানি উঠার কারণে বাড়ি থেকে ভ্যান বাহির করতে পারিনে। এই গ্রামের সব বাড়ির উঠানে পানি। রান্নাঘর, টয়লেট সহ সবকিছু পানির নীচে। এখন নতুন করে গ্রামে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। আয় রোজগার না থাকায় না খেয়ে দিন কাঁটাতে হচ্ছে বলে জানান তারা।
ইউপি চেয়ারম্যান এম এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম পানির নীচে। গত ২০ দিন ধরে প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্ধি। অতি বৃষ্টি ও কেশবপুর উপজেলার পানি এ অঞ্চলে অসার কারণে পানি কমছে না। নিজ উদ্দ্যোগে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল আমিন স্যার কে সাথে নিয়ে সকল খালের নেটপাটা অপসারণ করেছি। তার পরেও পানি কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যদি ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর থেকে নরনিয়া পর্যন্ত খাল খনন করা না হয় তাহলে আমাদের এলাকার পানি সরবে না। এই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সাথে দেনদরবার করে যাচ্ছি যাতে দ্রæত এলাকা থেকে পানি সরানো যায়। ঘেরভেড়ি তো শেষ পানি না সরলে ইরি চাষ ও করা সম্ভব হবে না।