রবিবার, ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তালায় বন বিভাগের এফজি ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে ২ হাজার গাছ বিক্রির অভিযোগ

এস এম মোতাহিরুল হক শাহিন
সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫ ৩:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কপোতাক্ষ নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন সামাজিক বনাঞ্চল থেকে প্রায় দুই হাজার বাউলা গাছ কেটে বিক্রির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তালা বন বিভাগের বনপ্রহরী (এফজি) ইউনুস আলী সরদারের বিরুদ্ধে। এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তালার কপোতাক্ষ নদীর বাঁধ এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১০ হাজার চারা রোপণ করা হয়। এ গাছগুলোর পরিচর্যার জন্য একটি সামাজিক বনায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
সম্প্রতি বৃষ্টিতে শতাধিক গাছ উপড়ে পড়ে। এ সুযোগে বনপ্রহরী ইউনুস আলী সরদার স্থানীয় বনাঞ্চল কমিটির সভাপতিকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় দুই হাজার গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এলাকাবাসী নাম না বলার সত্ত্বে বলেন গত এক মাস ধরে প্রতিদিন ১০-১২ জন বহিরাগত শ্রমিক দিয়ে গাছ কাটা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৮০ মণ জ্বালানি কাঠ, ৩০০ থেকে ৪২০টি গুড়ি এবং বিপুল পরিমাণ ডালপালা সংগ্রহ করা হয়। এসব কাঠ বড় ট্রলারযোগে পাইকগাছা ও আশপাশের এলাকায় পাচার করা হয়েছে। এতে মোট বিক্রয়মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকার বেশি বলে অভিযোগ উঠেছে। চরগ্রামের বাসিন্দা আনিছ ফকির বলেন, “শত শত গাছ কেটে নেওয়া হলেও এর কোনো সঠিক হিসাব নেই। বনাঞ্চলকে ইচ্ছেমতো উজাড় করা হচ্ছে, অথচ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।” এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, বনপ্রহরী ইউনুস আলী সরদার স্থানীয় হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সড়ক নির্মাণ কাজে প্রভাব খাটিয়ে এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।

স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, সামাজিক বনাঞ্চলকে ঢালাওভাবে উজাড় করা হচ্ছে অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

 


সোমবার সকালে কপোতাক্ষ নদীর বাঁধ সংলগ্ন সামাজিক বনাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, শত শত গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। একাধিক স্থানে ডালপালা ও ২০/২৫টি ছোট গুড়ি পড়ে আছে। তালা বন বিভাগের অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ৬০টির মতো কাঠ মজুত রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউনুস আলী সরদার বলেন, “কমিটির সভাপতির মাধ্যমে গাছ কাটা হয়েছে। সব গাছ অফিসে আনা হয়নি। খরচ বাদ দিয়ে বাকি টাকা সমিতির কাছে দেওয়া হবে। তবে অতিরিক্ত গাছ কাটার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। সমিতির সভাপতি অমেদ আলী দাবি করেন, গাছ কাটা হয়েছে সমিতির সিদ্ধান্তে। সবাইকে ভাগ করে দেওয়া হবে। তবে অতিরিক্ত গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
তালা বন বিভাগের কর্মকর্তা মারুফ বিল্লা বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি শুনেছি। তবে অতিরিক্ত গাছ কাটার সুযোগ নেই। এলাকার সুবিধাভোগীরাই এ টাকা পাবেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রকৃত দোষিদের খুঁজে বের করা হবে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাযকিয়া বলেন, বন বিভাগের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে। তবে গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।