কলারোয়ায় বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারনার মাধ্যমে ৮লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া দালাল বাবলুর শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতলেব মিলনায়তনে জনার্কীন সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্য পাঠ করছেন কলারোয়ার রায়টা দক্ষিণ এলাকার নেছার আলী সরদারের ছেলে আব্দুল জলিল।
তিনি বলেন আমি দীর্ঘদিন কলারোয়ায় গ্রাম ডাক্তার হিসেবে সুনামের সাথে কর্মরত ছিলাম। তিন সন্তান নিয়ে পরিবারের সাথে শান্তিতে ছিলাম। কিন্তু ওফাপুর গ্রামের মো: মাজেদ আলীর পুত্র বাবলুর রহমান (দালাল) আমাকে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে বাবলু আমাকে উচ্চ বেতনে চাকুরির প্রলোভন দেখালে ৫ লক্ষ টাকায় কলিং ভিসায় মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুত গ্রহণ করি। আমি সরল বিশ^াসে বাবলুর কথায় ধার দেনা ও গোয়ালের গরু বিক্রয় করে তার হাতে ৫লক্ষ টাকা তুলে দেই। এরপর বাবলু জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট একটি কলিং ভিসার কাগজ আমাকে ধরিয়ে দেয়। ১৩ জুন ২০২৪ তারিখে আমার বিমানের টিকিট ধরিয়ে দেয়। ১৩ জুন বিমানে ওঠার পর জনৈক ইউসুফ আলীকে আমার ভাই বানিয়ে তৈরি করা ভূয়া কাগজপত্র দেয় বাবলু। অথচ বাস্তবে আমার কোন ভাই নেই। মালয়েশিয়া বিমান বন্দরে নেমে ইমিগ্রেশন থেকে সীল মেরে বের হওয়ার সাথে সাথে সেখানকার পুলিশ আমাকে এবং ওই ইমিগ্রেশন অফিসারকে আটক করে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার অভিযোগে কারাগারে প্রেরণ করে। কারাগারে ১৪ দিন রিমান্ডে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে সেখানকার পুলিশ।
তিনি আরো বলেন ২৮ দিন সাজা খাটার পর কারাগার থেকে বের হলে দালাল বাবলুর সেখানকার সহযোগিরা আমাকে আটক করে একটি গভীর জঙ্গলে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে মারপিট করে গুরুতর আহত করে বলে ৩লক্ষ টাকা না দিলে হত্যার হুমকি দেয়। উপায়ন্তর হয়ে আমি বাড়িতে যোগাযোগ করলে আমার পিতা বাড়ির গহনাসহ অন্যান্য মালামাল বিক্রয় করে ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করে। টাকা পেয়ে ওই চক্রের সদস্যরা আমাকে একটি রাস্তার ধারে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। মালয়েশিয়ায় থাকা আমার ভগ্নিপতি ফারুক হোসেন খবর পেয়ে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরবর্তীতে দেশে পাঠিয়ে দেয়।
জলিল বলেন দেশে ফিরে দালাল বাবলুর কাছে টাকা চাইতে গেলে ১০ সেপ্টেম্বর আমাকে ৫ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মোতাবেক টাকা চাইতে গেল তার ছোট ভাই হুমায়ুন উল্টো আমাকে মারপিটসহ খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে। এমনকি হুমায়ুন হুমকি প্রদর্শন করে বলছেন বাড়াবাড়ি করলে যেখানে পাবো সেখানেই পিটিয়ে হত্যা করবো। বর্তমানে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। কোন রকমে জীবন বাঁচিয়ে দেশে ফিরলেও নিজের এবং পিতার সর্বশ^ বিক্রয় করে নি:শ^ হয়ে পড়েছি। একদিকে টাকা পয়সা সবই গেল অন্যদিকে ওই দালাল চক্রের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় চরম মানবেতর জীবন যাপন করি। আমি ওই দালাল বাবলুর রহমানের নিকট থেকে আমার টাকা উদ্ধার এবং জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।