সেলিম হায়দার :
শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার মামলায় ৭০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘ দিন কারাভোগের পর জামিন মুক্তি পেয়েছেন সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব। উচ্চ আদালত থেকে জামিনের আদেশ পাওয়ার পর মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে কেরাণীগঞ্জস্থ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তিপান তিনি। মুক্তি পেয়েই তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। এসময় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির য্গ্মু মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল ও তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালসহ কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।
এদিকে কারাগারে থাকা সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব জামিনে মুক্তি পাওয়ার খবরে মঙ্গলবার দুপুর থেকে সাতক্ষীরাসহ তালা-কলারোয়া এলাকার সহা¯্রাধিক নেতা কর্মী তাদের প্রাণের নেতাকে স্বাগত জানানোর জন্য কেরাণীগঞ্জস্থ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে ভীড় জমায়।
এসময় সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে যুগ্ম আহবায়ক তারিকুল হাসান, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল হাসান হাদি, জেলা যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক আইনুল ইসলাম নান্টা, যুবনেতা মোস্তাক অহম্মেদ সহ শতশত নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব এর পৃথক তিনটি জামিননামা সম্পাদন করেন সাতক্ষীরা জেলা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী এ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ। গত ২৭ আগস্ট দুপুরে উচ্চ আদালতের ১১ নং বেঞ্চ থেকে তিনিসহ কারাগারে থাকা ৪৬ বিএনপির সকল নেতা-কর্মীদের জামিন দেয়া মহামান্য আদালত।
এ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ বলেন, ২০০২ সালে কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনার ১২ বছর পর কলারোয়া থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে পৃথক তিনটি চার্জশীট দাখিল করেন। যার প্রেক্ষিতে আদালত সাবেক এমপি হাবিবসহ ৫০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। এর মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবকে সর্বোচ্চ ৭০ বছরের সাজা প্রদান করে আদালত।
নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে তালা উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব একজন ত্যাগী ও কর্মীবান্ধব নেতা। তিনি তালা-কলারোয়ার উন্নয়নের রুপকার। তাকে অন্যায় ভাবে জালিম সরকার আদালতের উপর প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েসি রায়ের মাধ্যমে ৭০ বছরের সাজা প্রদান করেন। ৫ আগষ্ট ছাত্রজনাতার বিপ্লবের মধ্যদিয়ে কর্তৃত্ববাদি সরকারের পতন হলে আদালতের মাধ্যমে তিনি মুক্তি পান। তার মুক্তিতে এই জেলার মানুষ স্বস্তির নিশ^াস ফেলেছে। আমরা আশা করছি অতি শীঘ্রই তালা কলারোয়ার নয়নের মনি আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।
তিনি বলেন, তার মুক্তির খবরে জেলাব্যাপী চলছে উৎসবের আমেজ। ইউনিয়নে ইউনিয়নে চলছে মিষ্টি বিতরণ।
এদিকে তালা উপজেলা যুবদলের উদ্দ্যোগে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক ও তালা-কলারোয়ার সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হতে মুক্তি পাওয়ায় আনন্দ মিছিল করেছে। সোমবার বিকালে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মির্জা আতিয়ার রহমান, যুগ্ম আহবায়ক সাইদুর রহমান সাইদ ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স ম ইয়াছিন উল্লাহর নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশাল আনন্দ মিছিল বের হয়। মিছিলটি তালা জনতা ব্যাংক থেকে শুরু হয়ে উপশহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে তিনরাস্তার মোড়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপজেলার যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন অংগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এসময় সাবেক এমপি হাবিবের মুক্তিতে উপজেলা নেতাকর্মীদের মধ্যে উল্লাস ও উৎফুল্ল লক্ষ্য করা গেছে।